চারণ কবি ভারভারা রাও MCQ প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণী বাংলা

By

চারণ কবি ভারভারা রাও MCQ

আজকে আমাদের তরফ থেকে নতুন সিলেবাস এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত একাদশ শ্রেণী ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভারতীয় কবিতা ‘চারণ কবি’ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর তোমাদের সাথে শেয়ার করা হল। এই প্রশ্ন গুলি তোমাদের আগামী সেমিস্টার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে বিশেষ ভাবে সহায়তা করবে।

আশা করছি তোমাদের প্রশ্ন উত্তর গুলি ভালো লাগবে। দেরি না করে এখন ঝটপট প্রশ্ন উত্তর গুলি দেখে নাও।

১। ‘চারণ কবি’ কবিতাটি কে লিখেছেন?
উ: ভারভারা রাও।

২। ‘চারণ কবি’ কবিতাটি কে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন?
উ: শঙ্খ ঘোষ।

৩। ‘নিয়ম কানুন যখন সব’ – নিয়ম কানুন সব কি হয়েছে?

  • ভঙ্গ
  • লোপাট ✔️
  • চুরি
  • ছিনতাই

৪। “আর সময়ের ঢেউ-তোলা _________ দল”। (শূন্যস্থান পূরণ করো)

  • ঘন মেঘের
  • কালো মেঘের ✔️
  • নীল মেঘের
  • সাদা মেঘের

৫। “ফাঁস লাগাচ্ছে” – কোথায় ফাঁস লাগানো হচ্ছে?

  • গলায় ✔️
  • হাতে
  • পা
  • কোমরে

৬। “চুইয়ে পড়ছে না কেনো” – এখানে কি চুইয়ে পড়ছে না?

উ: রক্ত।

৭। ঘূর্ণিপাকে বিদ্যুৎ __________ হয়ে উঠেছে?

উ: বাজ।

৮। “জেলের গরাদ থেকে বেরিয়ে আসছে” – জেলের গরাদ থেকে কি বেরিয়ে আসছে?

  • কন্ঠের স্বর
  • লিপিকার স্বর ✔️
  • বেদনার স্বর
  • আনন্দের স্বর

৯। “বাতাসকে মুক্ত করে দেয়” – কি মুক্ত করে দেয়?

  • সুর ✔️
  • গান
  • ছন্দ
  • কবিতা

১০। “কয়েদ করে তাকে” – কাকে ‘কয়েদ’ করার কথা বলা হয়েছে?

  • ডাকাত
  • কবি ✔️
  • জনগণ
  • চোর

১১। ________ আরও শক্ত করে জড়িয়ে দেয় ফাঁস।

  • গর্দানে ✔️
  • কোমরে
  • হাতে
  • পায়ে

১২। ফাঁসির মঞ্চ ভারসাম্য রাখবার জন্য কোথায় মিলিয়ে যাচ্ছে?

  • মাটিতে ✔️
  • বলিতে
  • জলে
  • আকাশে

১৩। কবিতায় কাকে স্পর্ধা জানানোর কথা বলা হয়েছে?

  • মৃত্যুকে ✔️
  • শত্রুকে
  • জন্মকে
  • কোনটিই নয়

১৪। কবিতায় গান কি হয়ে উঠেছে?

  • যুদ্ধের শস্ত্র ✔️
  • যুদ্ধের কবিতা
  • যুদ্ধের বিমান
  • যুদ্ধের কামান

১৫। কবিতায় বৃষ্টি কেমন ভাবে হয়েছিল?

  • ঝিরঝিরে ✔️
  • ঝম ঝম করে
  • ফোটা ফোটা
  • ছিটে ফোটা

১৬। ভারভারা রাও এর পুরো নাম কি ?
উ: পেন্ডিওয়ালা ভারভারা রাও।

১৭। ভারভারা রাও কোন ভাষার সাহিত্যিক?
উ: তেলেগু।

১৮। কবি কোন সাহিত্য পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন?

  • সৃজন
  • সৃজনা ✔️
  • কল্পতরু
  • তেলেগু সাহিত্যম

১৯। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কবি ভারভারা রাও কবে মৃত্যু বরণ করেছেন?

  • ২০২০ সালে
  • ২০২১ সালে
  • ২০২৪ সালে
  • ২০২২ সালে ✔️

২০। ভারভারা রাও কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

  • ১৯৩০ সালে
  • ১৯৪০ সালে ✔️
  • ১৯৪৪ সালে
  • ১৯৫০ সালে

Development of Urban Settlement

নগর বসতির বিকাশ

              বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সুবিধাযুক্ত স্থানে কিছু প্রাচীন আদি জনবসতি ধীরে ধীরে ক্ষুদ্র বাজারে বা বাণিজ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে দেখা গেছে যে শহর গড়ে তুলতে যে দুটি বিশেষ উপাদান উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকা গ্রহণ করে, সেগুলি হল বাণিজ্যের সুবিধা এবং জনবসতির গোষ্ঠীবদ্ধতা। প্রাচীনকালে বাণিজ্যকেন্দ্রগুলি পথের ধারে গড়ে উঠত। এই পথগুলি সাধারণত বণিকদের দ্বারা নির্মিত। এই সমস্ত পথের ধারে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যাবলীর বৃদ্ধির জন্য জনবসতিগুলি ছোটো শহরে পরিণত হয়েছে। আবার জনবসতির গোষ্ঠীবদ্ধতার কার্যকলাপও শহর বিকাশের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। জনবসতির এককেন্দ্রিক গোষ্ঠীবদ্ধতা বাণিজ্যের বৃদ্ধিকে উৎসাহ জোগায়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক অথবা অন্য কারণে বিভিন্ন ধরনের শহরের বিকাশ হয়েছিল। শহর বা নগর বসতির বিকাশের প্রধান প্রধান পর্যায়গুলি হল—

আরও পড়ুন:  WBCHSE Semester Exam Pattern: প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টার এর প্রশ্নের ধরণ কেমন হবে? জানিয়ে দিল শিক্ষা সংসদ

1. প্রাচীন যুগ (Ancient Age) : প্রাচীন সভ্যতার প্রধান স্থানগুলোর অবস্থা লক্ষ করলে দেখা যায় যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে নগরগুলো ক্রান্তীয় মণ্ডলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মানব সমাজের ক্রমবিকাশের ফলে নগরের বিকাশের জন্য একমাত্র অনুকূল পরিবেশ ছিল ক্রান্তীয় মণ্ডল। প্রতিটি প্রাচীন সভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছে নদী উপত্যকায়। এই নদীগুলি বরফ গলা জলে পুষ্ট হওয়ায় সারা বছর নাব্য থাকে এবং প্রতি বছর বর্ষাকালে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার ফলে পলি জমে মাটি উর্বর প্রকৃতির হয়। এই পলি মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদনের সঙ্গে পশুপালনও হত। প্রাচীন নগরগুলোর আয়তন এবং জনসংখ্যা উভয়ই কম ছিল। প্রাক-ঐতিহাসিক যুগের সংগ্রহ শিকার, মৎস্য শিকার নির্ভর আদিম গোষ্ঠীগুলি প্রধানত যাযাবর প্রকৃতির ছিল। তারা অস্থায়ী বসতিতে বসবাস করত। নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ তার খাদ্য সরবরাহের জন্য কৃষিকাজ পদ্ধতি আবিষ্কার করে। এই উৎপাদনমূলক কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির প্রচলনের ফলে খাদ্যের সরবরাহ অধিকতর সুনিশ্চিত হয় এবং খাদ্যের উৎপাদন যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহের কারণে প্রাচীন স্থায়ী বসতিগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত সম্পদ, সময় ও শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ তার জীবিকায় ও সমাজের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এই সমস্ত পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাচীন সমাজের মানুষ ঘন সংবদ্ধ এবং গোষ্ঠীবদ্ধভাবে আদি শহরগুলিতে বসবাস করতে থাকে। 

প্রাচীন যুগে নগরের বিকাশকে তিনটি পর্বে ভাগ করা যায় যথা

(i) নব্য প্রস্তর যুগে উদ্বৃত্ত খাদ্যকে কেন্দ্র করে নগরের সৃষ্টি হয়।

(ii) নগর সভ্যতার দ্বিতীয় পর্ব হল খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার আমলে। 

(iii) নগর প্রতিষ্ঠার তৃতীয় পর্বের শুরু হয়েছিল ঊনবিংশ শতাব্দীতে এবং এই সময় নগর সভ্যতার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে।  

             প্রাচীন যুগে বিশ্বের প্রথম শহর বসতিগুলি দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার সিন্ধু ও নীলনদ উপত্যকার মধ্যবর্তী অঞ্চলে এবং মেসোপটেমিয়ার টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর উর্বর সমভূমিতে গড়ে উঠেছিল। এইভাবে কৃষি ও অকৃষিমূলক দুধরনেরউপজীবিকায় নিযুক্ত বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণির উদ্ভব হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে সমাজ পরিচালনার জন্য বহু কর্মচারী সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে এই কর্মচারীরা সমাজের উচ্চতম শ্রেণিতে পরিণত হয়। প্রাচীন যুগে নগরের আয়তন ছিল মাত্র 220 একর। নাগরিকদের অধিকাংশ কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও অন্য কাজে তারা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করত। প্রাচীন যুগে প্রতিটি নগরে বাণিজ্যের প্রচলন ছিল। প্রাচীন যুগে কৃষকদের কাছ থেকে উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে গোলায় সংরক্ষণ করা হত। এই সংরক্ষিত শস্য শাসক সম্প্রদায়, সামরিক বাহিনী, সরকারি কর্মচারী এবং পুরোহিতদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হত। প্রাচীন যুগে শহরের রাস্তাগুলি ছিল সোজা কিন্তু কোথাও চওড়া কোথাও সরু ছিল। নগরায়ণের আদি পর্যায়ে গ্রিকরা এথেন্স ও আলেকজান্দ্রিয়া শহর গড়ে তোলে। কিন্তু ইউরোপের অন্ধকার যুগে গ্রিক ও রোমান সভ্যতা এবং তাদের সৃষ্ট শহরগুলি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়। প্রাচীন যুগে নগরের ক্রমবিকাশের অঞ্চলগুলি হল—

আরও পড়ুন:  Yogyashree Scheme: যোগ্যশ্রী প্রকল্প নিয়ে বিরাট ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর! এবার সবাই পাবে সুবিধা, দেখে নিন

(i) জর্ডন উপত্যকায় নগরায়ণ 

(ii) টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস উপত্যকায় নগরায়ণ

(iii) নীল নদ উপত্যকায় নগরায়ণ 

(iv) সিন্ধু নদী উপত্যকায় নগরায়ণ 

(v) হোয়াংহো নদী উপত্যকায় নগরায়ণ 

(vi) মধ্য আমেরিকায় নগরায়ণ

2. মধ্যযুগ (Medieval Age) : প্রাচীন ও মধ্যযুগের সন্ধিকালে সমগ্র ইউরোপে বর্বরতা ছড়িয়ে পড়ে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে নগরের আইন শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে আফ্রিকার স্থানীয় অধিবাসীরা এই বর্বরতায় মেতে ওঠে। 500 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1000 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে ইউরোপের অধিকাংশ নগরে কোনো বিকাশ হয়নি। এই 500 বছরকে ইউরোপের নম্বর ইতিহাসকে কৃষ্ণযুগ বলে। মধ্যযুগে ইউরোপে নগর বসতির এক ধরনের পুনরুত্থান লক্ষ করা যায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গ্রিক ও রোমান সভ্যতার সময়ে শহর কিংবা নগর সভ্যতার দ্বিতীয় পর্বের বিকাশ সাধিত হয়। রোমান সভ্যতায় যেখানে প্রাচীন শহর বা নগরের অবস্থান ছিল সেই স্থানে নতুন শহর বা নগরের নির্মাণ হতে থাকে। সেই পুরোনো সভ্যতা স্থানগুলি ছাড়াও নতুন কিছু কিছু স্থানে শহর গড়ে উঠতে থাকে। ইউরোপের নাগরিক জীবনযাত্রার উন্নতির পিছনে কতকগুলি বিষয় ছিল সেগুলি হল—লোহার যন্ত্রাংশ, উন্নত পালবাহী নৌকা, মুদ্রার প্রচলন, অস্ত্রের ব্যবহার, বাণিজ্যিক উন্নতি, অধিক উন্নত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, উৎপাদন বৃদ্ধি প্রভৃতি। এই সমস্ত উপাদান নগরায়ণের মাত্রাকে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে। এইভাবে মধ্যযুগে শহর ও নগরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময় পশ্চিম এশিয়া ও মিশরের নগর নির্মাণের কৌশলকে অবলম্বন করে গ্রিস এবং ইতালিতে একে একে বিভিন্ন ধরনের শহর বা নগর আত্মপ্রকাশ করে। মধ্যযুগে অনেক সময় রাস্তা, জল সরবরাহ, দূষণ, সংস্কার প্রভৃতির অবস্থার জন্য নগর প্রসারণ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

          আনুমানিক 1400 খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল। এই সময় ইউরোপের প্রায় সমগ্র অংশে ঘন জনবসতিপূর্ণ শহর কিংবা নগরের বিকাশ হয়। নবজাগরণের সময় সবচেয়ে বেশি দ্রুত নগরায়ণ বৃদ্ধি পায় পশ্চিম ইউরোপে। এই সময় নতুন দেশ আবিষ্কার, দেশভ্রমণ, সমুদ্রযাত্রা, উপনিবেশ প্রভৃতির ফলে ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে বিশ্বের বহু দেশ বা অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপিত হয়। পরিবহন ব্যবস্থা, বাণিজ্য, ব্যাংক পরিষেবা, প্রভৃতির উন্নতির ফলে পশ্চিম ইউরোপে বহু দেশে ধনতন্ত্রের প্রচলন হয় এবং নগরায়ণের অগ্রগতি হতে থাকে। ইউরোপে নগরায়ণের সঙ্গে লন্ডন, প্যারিস, জেনেভা প্রভৃতি শহরগুলি দ্রুত প্রসারিত হতে থাকে।

3. আধুনিক যুগ (Modern Age) : অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রায় 200 বছর ধরে বিশ্বের প্রায় সবই দেশেই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে নগরায়ণ হয়েছে। এই সময়ে বহু সংখ্যক নতুন শহর কিংবা নগরের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক একইভাবে অনেক শহর থেকে নগর, নগর থেকে মহানগর, মহানগর থেকে পৌরপুঞ্জ কিংবা পৌরপুঞ্জ থেকে মেগাসিটিতে প্রসারিত হয়েছে। একই সঙ্গে নগরগুলির আয়তন অত্যধিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি, কৃষিক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ, ব্যাপকহারে খনিজ সম্পদ সংগ্রহ, শিল্প ব্যবস্থার উন্নতি এবং সেই সঙ্গে সমান্তরাল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে জনসংখ্যা। ঐ সময় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মানুষ যখন কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি দিয়েছে। ফলস্বরূপ শহর বা নগর প্রসারিত হয়েছে। আধুনিক যুগে বাষ্প চালিত ইঞ্জিনের উদ্ভব, কয়লার ব্যবহার, লৌহ ইস্পাত শিল্পের প্রসার শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রেল পথের নিত্য নতুন আবিষ্কার প্রভৃতি নগরায়ণে অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে। 1800 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা আগে যা ছিল তার চেয়ে প্রায় 175.80 কোটি বেড়েছে, বৃদ্ধির হার প্রায় 1.08 শতাংশ। 1800 খ্রিস্টাব্দে সারা বিশ্বে 5000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা ছিল প্রায় 750টি। 20000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা ছিল প্রায় 200টি এবং 100000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা ছিল 45টি। কিন্তু 1950 খ্রিস্টাব্দে 5000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা প্রায় 27600, 20000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা প্রায় 5500টি এবং 100000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট নগরের সংখ্যা এসে দাঁড়ায় 875টিতে। বর্তমানে পৃথিবীতে 1000000 বা তার বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট শহর এসে দাঁড়ায় প্রায় 150টি। এই ধরনের শহর সাধারণত পশ্চিমি দেশে আগে দেখা গেলেও বর্তমানে অনেক স্বল্প উন্নত দেশেও এর চেয়ে বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট শহর লক্ষ করা যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান হারে নগরায়ণের প্রভাবে অনেক বড়ো নগরের সঙ্গে তার নিকটবর্তী ছোটো শহরগুলি মিলিত হয়ে মহানগর বা নগরমালা (conurbation) সৃষ্টি হয়েছে। নিউইয়র্ক, লন্ডন, কলকাতা, টোকিও প্রভৃতি নগরে এই ধরনের নগরমালা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর অনেক শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের নগরমালা সৃষ্টি হয়েছে। নগরমালা সৃষ্টির প্রক্রিয়া অনবরত কার্যকর হতে থাকলে অনেকগুলি নগরাঞ্চল একত্রিত হয়ে বিশাল মেগালোপলিসের (megalopolis) সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুন: 

             উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে আধুনিক নগর সৃষ্টির উপাদান হল (i) নগরকেন্দ্র (urban centre), (ii) শহরতলি (suburbs), (iii) বিচ্ছিন্ন প্রতিশহর (exurbs), (iv) নগরপ্রান্ত (urban fringe), (iv) উপশহর (satellite town)। আধুনিকযুগে গঠিত নগরগুলি আকার ও আয়তনে বিরাট, নগরগুলি বাণিজ্য প্রধান এবং নগরগুলিতে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ লক্ষ করা যায়।

            বর্তমানে দ্রুত হারে নগরায়ণের ফলে পৃথিবীর বহু দেশে আর্থ-সামাজিক ও নাগরিক সমস্যার উদ্ভব হয়েছে। আধুনিক যুগে নগরগুলির প্রধান সমস্যা হল বাসস্থানের অভাব, বাড়িগুলির মূল্য অধিক, রাস্তাঘাট অতিজনাকীর্ণ, পরিবহনের মাধ্যমগুলি জানজটপূর্ণ এবং দূষণের মাত্রা অধিক। এই সমস্ত কারণে নগরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মতে এইসব সমস্যার জন্য বৃহদায়তন নগরগুলির অবক্ষয় শুরু হয়েছে।

Leave a Comment