জিতু সাঁওতাল ছিলেন সাঁওতাল জনগণের একজন সাহসী এবং প্রভাবশালী নেতা যিনি 1920-এর দশকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন এবং অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি মহাত্মা গান্ধী এবং স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য তাঁর অহিংস আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
জিতু সাঁওতাল পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার কোচকান্দার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজবংশী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যা সাঁওতালদের একটি উপ-গোষ্ঠী। তিনি একজন কৃষক এবং একজন মহাজন ছিলেন এবং তিনি তার সহকর্মী সাঁওতালদের সাহায্য করার জন্য একটি সমবায় ব্যাঙ্কও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সাঁওতালদের মধ্যে খাজনা মুক্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, যারা জমিদার ও ব্রিটিশ সরকারের দ্বারা শোষিত ও নিপীড়িত ছিল। তিনি অন্যায় কর, আইন ও নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সমাবেশ এবং বয়কটেরও আয়োজন করেছিলেন। তিনি হাজার হাজার সাঁওতালকে তার কাজে যোগদানের জন্য একত্রিত করেন।
জিতু সাঁওতাল 1932 সালে “গান্ধী রাজ” ঘোষণা করেছিলেন, যার অর্থ সাঁওতালরা তাদের নিজস্ব রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য অনুযায়ী নিজেদের শাসন করবে। তিনি এবং তার অনুসারীরা মালদহের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন আদিনা মসজিদ দখল করে নেন এবং এটিকে তাদের সদর দফতরে রূপান্তরিত করেন। তিনি নিজেকে “সাঁওতালদের গান্ধী” হিসাবেও ঘোষণা করেছিলেন এবং গান্ধী ক্যাপ পরতেন।
জিতু সাঁওতালদের আন্দোলন ব্রিটিশ পুলিশ দ্বারা নির্মমভাবে দমন করা হয়েছিল, যারা আদিনা মসজিদ আক্রমণ করেছিল এবং অনেক সাঁওতালকে হত্যা করেছিল। ১৯৩২ সালের ৭ ডিসেম্বর জিতু সাঁওতাল নিজেই গুলিবিদ্ধ হন। তার মৃত্যু সাঁওতাল ও অন্যান্য ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও শোকের ঢেউ ছড়িয়ে দেয়।
জিতু সাঁওতাল ছিলেন একজন বীর এবং একজন শহীদ যিনি তার জনগণের স্বাধীনতা ও মর্যাদার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি সাঁওতাল বিদ্রোহ এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন।