দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা PDF | প্রত্যাহিক জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা pdf

By

সুপ্রিয় বন্ধুরা,

আজকে আমি তোমাদের সাথে বাংলা বিষয়ের একটি প্রবন্ধ রচনা শেয়ার করলাম | এটি তোমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অনেক হেল্প করবে |

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

➯ভূমিকা: আধুনিক জীবনে যুক্তিবোধ ও কার্যকারণ পরম্পরা জ্ঞান থেকেই শুরু হলো বিজ্ঞানের জয়যাত্রা। আর এই চলচ্চিত্র ঠিকই প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান মানুষকে উপহারস্বরূপ দিবে সেই মধ্যযুগের কুসংস্কার থেকে মুক্ত আর দিল জগত জীবনের প্রতি এক আলাদা মায়া। এই মায়া মমতা থেকে যে শুধু দেবতারাই করতে পারে – এই বোধ সবার কাছ থেকে অপসারিত হল, তার জায়গায় এলস মহাজগতের মানুষের অসাধারণ মহিমার প্রতি আস্থা। মানুষ আর শুধু শুধু দেবতার উপর ও প্রকৃতির উপর ভরসা করে না থেকেই তার বিকল্প সন্ধান করতে শুরু করল। আর এভাবে ক্রমাগত বিকল্প সন্ধান করতে করতে মানুষ তার প্রত্যাহিক বা নিত্য – প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারকে গ্রহণ করতে শুরু করল। অবশ্য এটাও ঠিক যে, দৈনন্দিন বা ব্যবহারক জীবনে বিজ্ঞান কে গ্রহণ করার ফলে মানুষের দৈনন্দিন জীবন অনেক সহজ হয়ে উঠল।

➯প্রত্যাহিক জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব: বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত একটি মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব বিশেষভাবে রয়েছে। প্রত্যহিক জীবনে বিজ্ঞানের অস্তিত্বকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই মানুষের কাছে। প্রত্যাহিক জীবনচর্চার, অফিস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প প্রভৃতি প্রায় সব ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব রয়েছে।

আরও পড়ুন:  বাংলার উৎসব - প্রবন্ধ রচনা

যেমন – আজকে একটি মানুষের শরীরে কি রোগ রয়েছে সেটি ধরার জন্য বিজ্ঞানের সাহায্য লাগে, আর বিজ্ঞান খুব সহজে আমাদের সেই কাজ সম্পন্ন করে দেয়।

➯বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান: প্রত্যাহিক জীবনকে আমরা যদি কয়েকটি ভাগে ভাগ করে বিজ্ঞানের অবদান আলোচনা করি তাহলে আমরা জানতে পারবো যে বিজ্ঞানকে আমরা জানতে বা অজান্তে কতটা গ্রহণ করছে। প্রতিদিনের গৃহকার্য শুরু করে, খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব রয়েছে। প্রত্যহিক জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব অতুলনীয়।

➯অফিস আদালতে বিজ্ঞানের প্রভাব: অফিস আদালতেও সাধারণত কম্পিউটার, ইমেল, ইন্টারনেট প্রভৃতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব আমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে পারি। আর যার ফলে অফিস আদালতের কাজ খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়।

➯শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব: বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব বা অবদান অতুলনীয়। বর্তমানে ছাপাখানার দরুন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পুস্তক সংগ্রহ করতে পারে। আবার যে বই খুব সহজে পাওয়া যায় না সেই বইয়ের পাতা জেরক্স করেও নেয়া যাচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন যেকোনো বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পারছে  এবং তার মাধ্যমে আবার দেশ বিদেশের খবর খুব সহজে জানা সম্ভব হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  রাজা রামমোহন রায়: আধুনিক ভারতের পথিকৃৎ | রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা pdf

➯কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব: প্রত্যহিক জীবনে কৃষিতে যে সবুজ বিপ্লব ঘটেছে তাও বিজ্ঞানের প্রভাবে। আমাদের দেশের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে সাধারণ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে এক সবুজ বিপ্লবের দরকার ছিল। আগে যে অনাহার ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত আমাদের সমাজ ছিল, বর্তমানে তার নেই আধুনিক বিজ্ঞানের প্রভাবে। কারণ প্রত্যাহিত জীবনে মানুষের আর খাবারের অভাব নেই।

➯গৃহকাজে বিজ্ঞানের প্রভাব: আগে নিত্য প্রতিদিনের গৃহ কাজে বাড়ির মা ও বোনেরা ঘর ঝাড় দিতো, মসলা বাটতো, কাপড় কাচ তো, খড় কেটে গরুকে দিত, উনুনে ফু দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করত। আর এখন বিজ্ঞানের প্রভাবে তার বিকল্প এসেছে সমাজ, ঘর পরিষ্কার করা মেশিন, মিক্সি, ওয়াশিং মেশিন, খড় কাটা মেশিন, গ্যাসের উনুন, ফ্রিজ ইত্যাদি।

➯কুফল: প্রত্যাহিক জীবনে বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সমাজ উন্নত হতে পেরেছে কিন্তু
বিজ্ঞানের যে কুফল গুলি বা খারাপ দিকগুলির এখনও মানুষ দূর করতে পারেনি। তাই তো বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে তো বেগ, কিন্তু কেড়ে নিয়েছে মানুষের আবেগ। মানুষ যে পরস্পর নির্ভর করে সামাজিক সৌন্দর্যের মাধ্যমে জীবন-যাপন করতো তার নেই সবই কৃত্রিম হয়ে রইল সমাজে। যে রাসায়নিক স্যার ও কীটনাশক দিয়ে ক্রমবর্ধমান বর্ধিত জনসংখ্যার মুখে খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে মানুষেরা হচ্ছে বিভিন্ন রোগের দ্বারা ভুক্তভোগী।

আরও পড়ুন:  নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় - প্রবন্ধ রচনা | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় এর জীবনী রচনা

➯উপসংহার: সুতরাং দৈনন্দিন জীবনের যেদিকেই তাকাই না কেন বিজ্ঞানের প্রভাব কে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। কিন্তু অতিমাত্রায় বিজ্ঞান আবিষ্কৃত যন্ত্র কে ব্যবহার করে ক্রমাগত মানুষ হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। কৃত্রিম মানুষ তাই বিজ্ঞানের ভালো দিক থেকে কাজে না লাগিয়ে খারাপ দিক থেকে কাজে লাগাচ্ছে তাদের নিত্য প্রতিদিনের জীবনে। ফলে মানুষ হয়ে উঠেছে অমানুষ, আর ধীরে ধীরে মানুষ হয়ে উঠছে স্বার্থপর। অবশ্য এই স্বার্থপরতার কারণ বিজ্ঞান নয় – বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ।

এই রচনাকে অনুসরণ করে যে রচনা গুলি লেখা যাবে :-

১) প্রত্যহিক জীবন ও বিজ্ঞান
২) ব্যবহারিক জীবন ও বিজ্ঞান
৩) বিজ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবন

Leave a Comment