স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ- তাৎপর্য বর্ণনা করো।

By

স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ- তাৎপর্য বর্ণনা : মহাভারতের ভীষ্মপর্বের অন্তর্গত শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার ‘তৃতীয় অধ্যায়’ ‘কর্মযোগ’ থেকে আহৃত শ্লোকাংশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সখা অর্জুনকে ‘স্বধর্ম’ পালনের কথা বলে ছিলেন।


ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধবিরত অর্জুনকে যুদ্ধাদিকর্মে সচেষ্ট করার জন্য স্বধর্মের কথা বলেছেন। এখানে শ্রীকৃষ্ণ যে কথা বলেছেন তার অর্থ হল – অর্জুন ক্ষত্রিয়, তাঁর উচিত ক্ষত্রিয়োচিত কর্ম করা আর সেটা হল যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়ে স্বধর্ম পালনে রত হওয়া। তাছাড়া পার্থিব জগতে মানব সমাজে প্রতি বর্ণ ও প্রতি আশ্রমের শাস্ত্রবিহিত ধর্ম আছে। আর সেটাই মানুষের স্বধর্ম। শ্রীকৃষ্ণ আরও বলেছেন যে, স্বধর্ম অর্থাৎ নিজের ধর্ম দোষযুক্ত হলেও তা উত্তমরূপে অনুষ্ঠিত থেকে শতগুণে ভালো। আর, নিজের ধর্মের অনুষ্ঠান করতে গেলে যদি মৃত্যুও হয় তাও ভালো, তবু পরধর্ম বিপজ্জনক। শ্রীকৃষ্ণ জানেন, পরের ধর্ম প্রথমেই মনকে দুর্বল করে দেয়, কারণ এই ধর্মটি পরের’— তার সাথে একাত্মতা অসম্ভব। পরের ধর্ম পালন করতে গিয়ে পদে পদে ভয় উৎপন্ন হয়। তার ফলে ব্যক্তি মানুষটির স্বাভাবিক বিকাশ বিপর্যস্ত হয়। পরধর্ম পালন করা মানে কৃত্রিম পথকে বরণ করা। তাই পরধর্ম পালন ব্যক্তি মানুষের জীবনে কখনও সার্থক হতে পারে না। সুতরাং অর্জুন যেন তাঁর স্বধর্ম অর্থাৎ ক্ষাত্রধর্মকে ত্যাগ করে পরধর্ম গ্রহণ না করেন। যদি করেন, তাহলে তিনি জীবনে গৌরবের পরিবর্তে বিপদের মধ্যে নিমজ্জিত হবেন।
আরও পড়ুন:  বনগতা গুহা' গদ্যাংশটির সারসংক্ষেপ নিজের ভাষায় লেখো।

Leave a Comment