স্থানান্তর কৃষি : যাযাবর শ্রেণীর আদিবাসী উপজাতির জন গোষ্টিরা দুর্গম অঞ্চলের বনজঙ্গল কেটে ও পুড়িয়ে কৃষিজমি তৈরি করে 3-5 বছর কৃষিকাজ করার পর স্থান পরিবর্তন করে একই পদ্ধতিতে অন্যত্র কৃষি জমি প্রস্তুত করে এবং আর্থ সামাজিক দায় দায়িত্ব পালন করে। স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ধরনের কৃষি পদ্ধতিকে স্থানান্তর কৃষি ব্যবস্থা বলে। ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশে এই কৃষি ব্যবস্থা ঝুম চাষ নামে পরিচিত।
স্থানান্তর কৃষির অসুবিধা বা কুফল : স্থানান্তর কৃষির প্রধান অসুবিধা হল পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব। স্থানান্তর কৃষির মাধ্যমে নিন্মলিখিত পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
(১) বনভূমি হ্রাস : এই কৃষি পদ্ধতি জমি তৈরির ক্ষেত্রে বনভূমি কেটে তৈরি করা হয়। এর ফলে পার্বত্য অঞ্চলে দ্রুত বণভূমির পরিমাণ হ্রাস হচ্ছে।
(২) ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি : মাটির উপরি স্তরের আচ্ছাদন কেটে ফেলার ফলে ভূমিভাগ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, বৃষ্টিপাতের কারণে মৃত্তিকার আলগা উপরিস্তর সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
(৩) ভূমির উর্বরতা হ্রাস : মৃত্তিকার উপরিস্তর দ্রুত ক্ষয়ের ফলে মৃত্তিকার উপাদানগুলি অপসারিত হয় এবং মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস পায়।
(৪) জীববৈচিত্র হ্রাস : এই কৃষি ব্যবস্থায় জঙ্গল কেটে পুড়িয়ে কৃষি জমি প্রস্তুত করার জন্য স্থানীয় ভাবে জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নত হয়।
(৫) পরিবেশ দূষণ : এই কৃষি পদ্ধতির কারণে মৃত্তিকার বায়ু দূষণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়।