শুষ্কতার ক্ষয়চক্র : শুষ্কতার ক্ষয়চক্রের ধারণার প্রবক্তা হলেন L.C King। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার মরু অঞ্চল ও সাভানা অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণার মাধ্যমে বিস্তীর্ণ সমতলভূমির সৃষ্টি ও ক্ষয়প্রাপ্ত টিলার সৃষ্টির ব্যখ্যা করতে গিয়ে শুষ্কতার ক্ষয়চক্রের ধারনাটি তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে তিনি তিনটি পর্যায়ের কথা বলেছেন। যথা – যৌবন, পরিণত ও বার্ধক্য পর্যায়। শুষ্কতার ক্ষয়চক্রের এই পর্যায় গুলি সম্পর্কে নিন্মে আলোচনা করা হল।
(১) যৌবন পর্যায় : মরু ক্ষয়চক্রের যে পর্যায়ে ভূ-আলোড়নের ফলে প্রাথমিক ভুমিভাগের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে পূর্ণযৌবন লাভ করার পর দ্রুত ক্ষয়চক্র শুরু হয়, একে যৌবন পর্যায় বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) গ্রানাইট শিলায় গঠিত অঞ্চলে দারণের সৃষ্টি হলে মরু অঞ্চলের নদীর পূর্ণযৌবন লাভ হয় ও দ্রুত ক্ষয় শুরু হয়।
(ii) উচ্চ অংশের পাদদেশে পেডিমেন্ট গড়ে ওঠে।
(iii) দুটি নদীর মধ্যবর্তী জলবিভাজিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ইনসেলবর্জ এর আকৃতি ধারণ করে।
(২) পরিণত পর্যায় : মরু ক্ষয়চক্রের যে পর্যায়ে পূর্ণযৌবনের সমস্থ বৈশিষ্ট্য বিলুপ্ত হয় এবং ভূমির বন্ধুরতা হ্রাস পায় তাকে পরিণত পর্যায় বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) এই পর্যায়ে পেডিমেন্ট বিস্তার লাভ করে।
(ii) চাদর ক্ষয় ঘটায় বিস্তীর্ণ সমভূমি গড়ে ওঠে, যা পেডিমেন্ট নামে পরিচিত।
(iii) এই পর্যায়ে ভূমি ভাগগুলি সামান্য ঢেউ খেলানো হয়।
(৩) বার্ধক্য পর্যায় : মরু ক্ষয়চক্রে যে পর্যায়ে যৌবন অবস্থার সমস্থ বৈশিষ্ট্য এর অবনতি ঘটে এবং বিস্তীর্ণ সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বার্ধক্য পর্যায় বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) এই পর্যায়ে ইনসেলবার্জ বিক্ষিপ্ত ভাবে বা ছড়িয়ে ছিটকে অবস্থান করে।
(ii) এই পর্যায়ে যে বিস্তীর্ণ পেডিপ্লেন সৃষ্টি হয় তাকে বিজ্ঞানী লোসন প্যান ভ্যান বলে অভিহত করেছেন।
চিত্র : শুষ্কতার ক্ষয়চক্র |