ভূমিকা : পশ্চিমবঙ্গের হুগলি শিল্পাঅঞ্চল ভারত তথা পৃথিবীর বৃহত্তম পাট শিল্প অঞ্চল। হুগলি নদীর দুই তীরে টিটাগর, বজবজ, উইলগেরিয়া,
শ্যামনগর, শ্রীরামপুর, সাকরাইল, কামারহাটি প্রভৃতি অঞ্চলে পাট শিল্প কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। ১৮৫৫ সালে রিষড়াতে ভারতের প্রথম পাট কল
স্থাপিত হয়। এর পরবর্তী সময় থেকে এই অঞ্চলে
পাট শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটে।
ভারতের হুগলি নদীর দুই তীরে পাট শিল্প বিকাশ লাভের কারণ :
(ক) কাঁচামালের সহজলভ্যতা : অভিবক্ত ভারতবর্ষের গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ অঞ্চলে
উন্নতমানের কাঁচা পাট উৎপাদিত হত। এর উপর নির্ভর করে হুগলি নদীর দুই তীরে পাট শিল্প গড়ে ওঠে কিন্তু
বাংলা বিভক্তের পর হুগলি নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পাট চাষের উন্নতি লাভ করায় বর্তমানেও
এই শিল্পের কাঁচামালের অভাব হয় না।
(খ)
অনুকূল জলবায়ু : পাট চাষএর জন্য ২২ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেট উষ্ণতা ও ১০০ থেকে
১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত ও উর্বর মৃত্তিকা প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর এরূপ অনুকূল জলবায়ু েি অঞ্চলে লক্ষ্য
করা যায় বলে উন্নত মানের পাট উৎপাদিত হয়। আবার পাট শিল্পের জন্য আদ্র জলবায়ু আদর্শ হওয়ায় এই অঞ্চলে পাট
শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে আথবা বিকাশ লাভ করেছে।
(গ)বন্দরের
অবস্থান : হুগলি নদীর
দুই তীরে পাট শিল্প অঞ্চল গুলির জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত যন্ত্রপাতির আমদানি এবং উৎপাদিত
পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে পৌছে দেওয়ার জন্য কলকাতা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(ঘ)
জনঘত্বপূর্ণ অঞ্চল : পশ্চিমবঙ্গ ও তার পার্শ্ববর্তী বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড, রাজ্যগুলি
অধিক জনঘনত্ব পূর্ণ হওয়ায় পাট শিল্পের প্রয়োজনীয় শ্রমিক অভ্যন্তরীণ বাজারের অসুবিধা
হয় না। যা হুগলি শিল্পা অঞ্চলে পাট
শিল্পের কেন্দ্রীভবনের অন্যতম কারণ।
এছাড়াও ব্রিটিশ শাসনকালের অন্যতম ঔপনিবেশিক কেন্দ্র, উন্নত পরিবহন, জলের সহজ লভ্যতা,
পরিবেশ বান্ধব দ্রব্য, চাহিদা প্রভৃতি কারণে হুগলি নদীর তীরবর্তী শিল্পা অঞ্চলে পাট
শিল্পের উন্নতি ঘটেছে।