প্রশ্ন : বাংলা চলচ্চিত্রের ধারায় সত্যজিৎ রায়ের অবদান আলোচনা করো।
উত্তর : সত্যজিৎ রায় বাংলার এক চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার বিভিন্ন কীর্তি এর কারণেই শুধু মাত্র নিজ দেশ ভারতে খ্যাতি অর্জন করেনি, তিনি আন্তর্জাতিক স্তরেও খ্যাতি অর্জন করেছে। বাংলা সিনেমা তার হাত ধরেই আন্তর্জাতিক স্তরে শ্রেষ্ট আসন লাভ করেছে।
অবদান : তার শিক্ষা গ্রহণের সমাপ্তি ঘটার পর তিনি এক ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থায় আর্ট অব ডিরেক্টরি হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি একাধারে প্রচ্ছদশিল্পী, চিত্রকার, তথ্যচিত্রকার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করলেও, চলচ্চিত্র তার সাম্রাজ্য গড়ে দেয়। তিনি ইতালি ও ফরাসি সিনেমা থেকে প্রভাবিত হয়ে ৩৬ টি স্বল্পদৈর্ঘ্য, পূর্ণদৈর্ঘ্য, তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। বিভূতিভূষন বন্দোপাধ্যায় এর ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসটি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সে ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ছবি ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটি আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপুর সংসার’, ‘অপরাজিত’ নিয়ে অপু-ত্রয়ী তৈরি করেন, যার ফল স্বরূপ তিনি বিশ্ব জগতে সেরা চিত্রপরিচালকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হন। এমনকি সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটি ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবে’ মানবতার শ্রেষ্ট দলিল হিসাবে সন্মান লাভ করে।
সৃষ্ট চলচ্চিত্র : সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জলসাঘর, আগন্তুক, মহানগর, শাখাপ্রশাখা প্রভৃতি। তার দ্বারা নির্মিত ‘রবীন্দ্রনাথ’, ‘সিকিম’, ‘দ্যা ইনার আই’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রের কারণেই সিনেমার জগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এছাড়াও তিনি ছোট শিশুদের জন্য ‘হীরক রাজার দেশ’, ‘গুপী বাইন, বাঘা বাইন’ প্রভৃতি ছবি নির্মাণ করেছেন।
প্রাপ্ত পুরস্কার : চলচ্চিত্রের জগতে তার বিভিন্ন কৃতিত্বের কারণেই তিনি চলচ্চিত্রের জগতের ‘লিজিয়ান অফ অনার’ সহ আরও বহু পুরস্কার দ্বারা সন্মানিত হয়েছেন।