পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণ : ভারতের একক বৃহত্তম শিল্প হল কার্পাস বয়ন শিল্প। পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্রে মুম্বাই, পুনে , নাকপুর এবং গুজরাটের আমেদাবাদ, সুরাট প্রভৃতি অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবন লক্ষ্য করা যায়। ভারতের পশ্চিম অংশে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের প্রধান কারণগুলি নিচে আলোচনা করা হল।
(ক) কাঁচামাল : গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলের মধ্যে কার্পাস চাষএর প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশ এর কিছু অংশ, ঔরগ্যাবাদ, বুলদানা প্রভৃতি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কার্পাস চাষ করা হয়ে থাকে। মিশর ও পাকিস্তান থেকে দীর্ঘ আঁশ যুক্ত কার্পাসের আমদানির কারণে পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের কাঁচামালের অভাব হয় না।
(খ) বিদ্যুৎ শক্তির প্রাচুর্য : নিলামুলা, লোনাভালা, ভিলা, ভিপপুরী প্রভৃতি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র; ট্রম্বে, নাসিক, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এই অঞ্চলে অবস্থান করায় কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ শক্তির অভাব হয় না। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি কৃত কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহার হয় ফলে বিদ্যুৎ শক্তির প্রাচুর্যতা লক্ষ্য করা যায়।
(গ) জলবায়ু : কর্পাস বয়ন শিল্পের আদর্শ জলবায়ু হল আদ্র জলবায়ু। যা আরব সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে লক্ষ্য করা যায়। এর ওপর ভিত্তি করে পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতি ঘটেছে।
(ঘ) পরিবহন ব্যবস্থা : পশ্চিম ভারতের সাথে অন্যান্য অংশের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সোনালি চতুর্ভুজ ও হীরক চতুর্ভুজের বিস্তার এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হওয়ায় উন্নত সড়ক রেল পরিবহন এর মাধ্যমে এবং NH 3, 4, 5, 6, 7, 8 প্রভৃতি সড়কপথের বিস্তার কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণ। এছাড়াও কান্ডলা, মুম্বাই, জহরলাল বন্দর, মারমাগাও প্রভৃতি বন্দরের অবস্থান এবং আন্তজাতিক ক্ষেত্রে পরিবহনের সুযোগ সুবিধা থাকায় কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে।
(ঙ) মূলধন : পশ্চিম ভারতের পার্সি, গুজরাটি, ভাটিয়া সম্প্রদায়ের শিল্প পতীদের বিনিয়োগ কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রয়োজনীয় মুলধনের অভাব হয় না। ফলস্বরূপ এখানে কার্পাস বয়ন শিল্প উন্নতি লাভ করেছে।
উপরিক্ত অংশে আলোচিত কারণগুলি ছাড়াও, শ্রমিক, সরকারী সহযোগিতা, জলের সহজলভ্যতা প্রভৃতি পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের অন্যতম কারণ।