উত্তর: কবি ত্রিবিক্রমভট্ট ‘নলচম্পু’ কাব্যে নল ও দময়ন্তীর প্রণয় কাহিনীর অবতারণা করেছেন। এটি মহাভারতের অন্তর্গত আলোচ্য পাঠ্যাংশে আমরা লক্ষ্য করি আর্যাবর্ত নামক দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব বর্ণনা। দ্ব্যর্থক ভাষায় কবি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আর্যাবর্তের সুষমা।
কবি ‘আর্যাবর্ত” দেশটিকে বিশ্বের মধ্যে এক পরম উপভোগ্য সুন্দর, লীলাচঞ্চল দেশরূপে দেখেছেন। আর্যাবর্ত দেশটি স্বর্গলোকের চেয়েও প্রিয়। প্রাকৃতিক সুষমায় দেশটি দৃষ্টিনন্দন, সমৃদ্ধ, পূত, স্বর্গগমনের সোপানের মতো। পবিত্র গঙ্গার ধারা সতত প্রবহমান। তারই স্পর্শে আর্যাবর্তের মাটি তেজোময়-উর্বর-শ্যামলিমাযুক্ত এবং পাপমুক্ত। গঙ্গার ধারা স্পর্শে তট-বীথিযুক্ত হওয়ার প্রাকৃতিক শোভা বর্ধিত হয়েছে, আবার কবির চোখে মনে হয়েছে গঙ্গার প্রবাহিত তরঙ্গ যেন স্বর্গারোহণের সিঁড়ি। গঙ্গার তটে রয়েছে সুবর্ণময় পদ্ম ও নীলপদ্ম উৎক্ষিপ্ত রেণুরাশি, রয়েছে প্রচুর চঞ্চল চকোর, চক্রবাক, কারণ্ডব যাদের উপস্থিতিতে সর্বদাই অলংকৃত এই গঙ্গাতট। ফলে এক অনুপম শোভা বিধৃত আর্যাবর্তে।
আর্যাবর্ত দেশের গ্রামগুলির শোভাও ছিল শান্ত পরিমণ্ডলে আবৃত। সেখানে ছিল চতুর গোপালকদের বাস। ছিল রমণীয় পিয়াল, কাঁঠাল ও কদলীবনের সমারোহ। গ্রামের কুয়োগুলি সুস্বাদু জলে ছিল পরিপূর্ণ। আর্যাবর্তের গ্রামে গৃহসমূহ ছিল শান্তির – তৃপ্তির ও রসযুক্ত। কবির বর্ণনায় আর্যাবর্তের শান্তির পরিমণ্ডলের কথাই এখানে ফুটে উঠেছে। আর্যবর্ত দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে, পার্বত্য প্রকৃতিতে পবিত্র গঙ্গাধারায়, ফলযুক্ত বৃক্ষের সমারোহে এবং উপবনে শোভিত হয়ে চারিদিক সবসময় রমনীয় উপভোগ্য করে রাখত তা কবির বর্ণনায় স্পষ্ট।