গঙ্গাস্তোত্রম্-এ গঙ্গাকে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো। | উচ্চ মাধ্যমিক সংস্কৃত | গঙ্গাস্তোত্রম থেকে রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

By

প্রশ্ন : গঙ্গাস্তোত্রম্-এ গঙ্গাকে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো।
আথবা, 
গঙ্গার মাহাত্ম্য সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর : দার্শনিক কবি শংকরাচার্য তাঁর গঙ্গার প্রতি ভক্তিভাবের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে ‘শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্’ নামে স্তোত্রটি রচনা করেছেন। এই স্তোত্রে সর্বত্রই গঙ্গাকে সম্বোধন করে কবি তাঁর স্ততি করেছেন এবং অভীষ্ট বস্তুগুলি প্রার্থনা করেছেন। তাঁর বাণীবদ্ধ স্তুতিটি সংক্ষেপে এইভাবে লিপিবদ্ধ করা যায়—

দেবী গঙ্গা সুরেশ্বরী, ত্রিভুবনের ত্রাণকর্ত্রী, দেবাদিদেব শংকরের জটায় আবদ্ধ থেকে হয়েছেন ‘শংকর মৌলিবিহারিণী’ এবং তিনিই পবিত্র তরঙ্গবিশিষ্টা চিরপ্রবাহিনী স্রোতস্বিনী গঙ্গা। তিনি ভগীরথ কর্তৃক স্বর্গ থেকে আনীতা হয়ে ‘ভাগীরথী’ নামে প্রবাহিতা। ইনিই শ্রীবিষ্ণুর চরণ থেকে নির্গত হয়ে ‘হরিপাদ পদ্ম তরঙ্গিণী’ হয়েছেন। দেবী গঙ্গাই ‘জাহ্নবী’ রুপে পরিচিতা কারণ জহ্নু মুনি গঙ্গাকে গ্রাস করে পরে তাঁর কর্ণ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। ইনিই ছিলেন শাপভ্রষ্ট অষ্টবসু ভীষ্মের জননী। দেবী গঙ্গা কল্পলতার মতো ফলদায়িনী, সমুদ্র বিহারিণী, দেববধূগণ কর্তৃক কটাক্ষে দৃষ্ট হয়ে থাকেন। ইনিই নরকত্রাণকর্ত্রী, কলুষ বিনাশিনী, সর্বদা সুখদায়িনী, মঙ্গলপ্রদায়িনী, আর্তজনের সেবক জনের আশ্রয়দাত্রী। ইনিই উজ্জ্বল অঙ্গ বিশিষ্টা, ত্রিভুবন শ্রেষ্ঠা, কৃপাকটাক্ষময়ী। দেবরাজ ইন্দ্র ও গঙ্গার চরণে চিরপ্রণত। পরমানন্দ স্বরূপিণী, আর্তজনের বন্দিতা, স্বর্গের অলকানন্দা যেন জ্ঞানহীন শংকরের প্রতি করুণাঘন দৃষ্টিতে দেখেন। তাঁর পবিত্র ধারায় স্নাত হয়ে যারা জন্মরহিত হয়, তাঁর তটে বাস করে যারা বৈকুণ্ঠের শান্তি ভোগ করে যেন তাঁরা গঙ্গার কৃপাদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত না হন। এভাবেই দার্শনিক কবি শ্রী শংকরাচার্য গঙ্গা দেবীর বর্ণনা দিয়েছেন গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশে। 

আরও পড়ুন:  বনগতা গুহা গদ্যাংশের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। | বনগতা গুহা গদ্যাংশের নামকরণ কতটা সার্থক তা বিচার করো বা আলোচনা করো।

গঙ্গা হল পরম দেবী যিনি তার বিশুদ্ধ ও অস্থির তরঙ্গ দিয়ে তিন জগতকে মুক্ত করেন। গঙ্গা হল জ্ঞান এবং করুণার দেবী, যিনি তার ভক্তদের সর্বোচ্চ আবাস প্রদান করেন। তিনি মৃত্যু এবং ক্ষয়ের নাগালের বাইরে, এবং যারা তার উপাসনা করেন তাদের অমরত্ব এবং আনন্দ প্রদান করেন। যারা তার পবিত্র জলে পান করেন বা স্নান করেন তাদের জন্য গঙ্গাই জীবন ও পরিত্রাণের উৎস। তিনি তার ভক্তদের পাপ এবং অজ্ঞতা ধুয়ে ফেলেন, তিনি তুষার, চাঁদ এবং মুক্তোর মতো সাদা এবং ঐশ্বরিক দীপ্তিতে উজ্জ্বল। তিনি সকল প্রাণীর মা, যিনি তাঁর আশ্রয় প্রার্থনাকারীদের সুখ ও শান্তি দেন।

আরও পড়ুন:  আর্যাবর্তের বর্ণনা দাও।

Leave a Comment