প্রশ্ন : কৌমুদীর চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : শ্রীকৃষ্ণমাচার্য রচিত ‘বাসন্তিকস্বপ্নম্ নাটকের পাঠ্যাংশরূপে নির্বাচিত- সম্পাদিত অংশে আমরা কৌমুদী নামে এক নগরবাসিনীর বৃত্তান্ত পাই। তার সংলাপের মধ্যে দিয়ে তার চরিত্রের কয়েটি দিক উন্মুক্ত হয়েছে, তা আমার নিম্নলিখিত রূপে লিপিবদ্ধ করতে পারি—
প্রথমত, কৌমুদীর যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পাঠকচিত্তকে আলোড়িত করে তা হল তার নির্ভীকতা। নগরের রাজা ইন্দ্রবর্মার কাছে পিতা ইন্দুশর্মা কৌমুদীকে এনেছিলেন তারই বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। কৌমুদী নির্ভীক মনে রাজদরবারে এসে পৌঁছেছিলেন। শুধু তাই নয় রাজা ইন্দ্রবর্মা নানান যুক্তিতে কৌমুদীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও সে কিম্ভুতার মনের কথা অকপটভাবে বলেছে। রাজা যখন বলেছেন যে, পিতার অমতে বিবাহ করলে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তি হতে পারে, তাতেও কৌমুদী তার মন থেকে দন্ড ভয় সরিয়ে নিজের কথাই বলেছে।
দ্বিতীয়তঃ, কৌমুদী স্পষ্টবক্তা কিন্তু মিষ্টভাষী। পিতার পছন্দ করা পাত্রকে বিবাহ করতে অসম্মত হলেও রাজা ইন্দ্রবর্মার কাছে বিনম্রভাবে নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে স্বাভিমত প্রকাশ করেছে।
তৃতীয়তঃ কৌমুদী পিতার আদেশ পালনে অসম্মত হয়েছে শুধু পাত্র নির্বাচনের বিষয়ে। এছাড়া কিন্তু পিতার আর কোনো কথা অমান্য করেনি। তাই তো দেখা যায়, রাজার কাছে পিতা তারই বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে ডাকলে কোনোরকম প্রতিবাদ না করেই কৌমুদী চলে এসেছে।
চতুর্থতঃ, কৌমুদী ভালোবাসার প্রতি মর্যাদা দানকারী মহিলা। পিতার পছন্দ করা পাত্র সুন্দর, তরুণ। পাশাপাশি তার পছন্দ করা পাত্র বসন্তও সুন্দর, যোগ্য। মৃত্যুবরণেও ভালোবাসার পাত্রকে ছাড়তে সে পারবে না বলেছে। এতে কৌমুদী ভালোবাসাকেই যোগ্য মর্যাদা দিয়েছে।
পঞ্চমত, কৌমুদী একজন বুদ্ধিমতী মহিলা। রাজা ইন্দ্রবর্মা নানান যুক্তিতে পিতা ইন্দুশর্মার পছন্দ করা পাত্রকে বিবাহের কথা বললে কৌমুদীও নানান যুক্তিতে তা খন্ডন করে স্বমত প্রতিষ্ঠা করেছে।