➥ অর্তেজীয় কূপ : যে কূপ থেকে পাম্পের সাহায্য ছাড়াই ভু অভ্যন্তরের জল বা আবদ্ধ অ্যাকুইফারে অবস্থিত ভৌম জল যদি তার নিজস্ব চাপে স্বাভাবিকভাবে ভূপৃষ্ঠের দুর্বল অংশ বা ফাটল দিয়ে অথবা কূপ ও নলকূপ খনন করলে, ফোয়ারার ন্যায় বেরিয়ে আসে তবে তাকে আর্তেজীয় কুপ বলে। উত্তর ফ্রান্সের আর্তোয়েস প্রদেশে সর্বপ্রথম এই ধরনের কূপ খনন করা হয় বলে সেই অঞ্চলের নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয় আর্তেজীয় কূপ।
➥ আর্তেজীয় কূপের উৎপত্তি বা গঠন : আর্তেজীয় কূপ গঠনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিশেষভাবে শিলার গঠনে লক্ষ্য করা যায়। যেমন –
(i) অধভঙ্গের আকারে শিলার অবস্থান : কোনো ভাজ যুক্ত অঞ্চলে যদি অধভঙ্গের আকারে একটি প্রবেশ্য শিলাস্তর এর উপরে ও নিচে দুটি অপ্রবেশ্য শিলার অবস্থান থাকে এবং যদি তাদের প্রান্তদেশ ভূপৃষ্টে উন্মুক্ত হয়, তবে তখন আর্তেজীয় কূপ বা প্রশ্রবণ গঠন হয়।
(ii) অ্যাকুইফার গঠন : প্রবেশ্য শিলার দুই প্রান্তভাগ ভূপৃষ্টের বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে উন্মুক্ত হওয়ার কারণে, বৃষ্টিপাতের জল খুব সহজে প্রবেশ্য শিলার দ্বারা ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং অ্যাকুইফার এর উৎপত্তি ঘটায়।
(iii) আর্তেজীয় অবস্থা সৃষ্টি : অ্যাকুইফারটি সাধারনত অপ্রবেশ্য শিলা দ্বারা আবদ্ধ থাকে যার ফলে ভৌমজল প্রচন্ড চাপে অবস্থান করে। আর জলচাপ তল ভূপৃষ্টের অনেকটা উপরে অবস্থান করে থাকলে ভৌমজলে এক উর্ধমুখী চাপের সৃষ্টি হয়। জলবাহী স্তরে এরূপ অবস্থাকে আর্তেজীয় অবস্থা বলে।
চিত্র : আর্তেজীয় কূপ |
(iv) ভৌমজলের বহিগমন : ক্রমাগত আবদ্ধ অ্যাকুইফার এর ভৌম জল এর উর্ধমুখী চাপের জন্য অ্যাকুইফার এর ওপর অবস্থিত অপ্রবেশ্য শিলা স্তরে কোন দুর্বল স্থান বা ফটলের সৃষ্টি হলে, আথবা কূপ বা নলকূপ খনন করলে সাধারনত পাম্প এর সাহায্য ছাড়াই ভূ-অভ্যন্তরের জল ভূ-পৃষ্টের বাইরে ফোয়ারার ন্যায় বেড়িয়ে আসে এবং অর্তেজীয় কূপের সৃষ্টি করে।